সনাতন ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম বৃহৎ ধর্মীয় অনুষ্ঠান লক্ষ্মীপূজা আজ (রবিবার, ৯ অক্টোবর)। শারদীয় দুর্গোৎসবের পরবর্তী পূর্ণিমা তিথিতে ঘরে ঘরে ধনসম্পদ তথা ঐশ্বর্যের দেবী হিসেবে লক্ষ্মীপূজা করে থাকেন বাঙালি হিন্দুরা।
শাস্ত্রমতে, লক্ষ্মী ধনসম্পদ, সৌভাগ্য ও সৌন্দর্যের দেবী। লক্ষ্মী বাহন পেঁচা। বিষ্ণু রাম ও কৃষ্ণ রূপে অবতার গ্রহণ করলে, লক্ষ্মী সীতা ও রাধা রূপে তাদের সঙ্গিনী হন। কোজাগরী পূর্ণিমা রাতে দেবী লক্ষ্মী ধনধান্যে ভরিয়ে দিতে ভক্ত গৃহে আসেন। প্রাচীনকাল থেকেই রাজা-মহারাজা, ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে সাধারণ গৃহস্থ অব্দি সবাই দেবী লক্ষ্মীর পূজা দিয়ে আসছেন।
লক্ষ্মীকে নিয়ে বাংলার জনসমাজে বিভিন্ন জনপ্রিয় গল্প প্রচলিত আছে। এই গল্পগুলো পাঁচালীর আকারে লক্ষ্মীপূজার দিন পাঠ করা হয়। একে লক্ষ্মীর পাঁচালী বলা হয়। লক্ষ্মীপূজার গুরুত্বপূর্ণ অনুসঙ্গ হলো— সিঁদুর, ঘট, ধান, মাটি, আম্রপল্লব, ফুল, দুর্বা, তুলসীপাতা, হরীতকী, চন্দন, ধূপ, দীপ, নৈবেদ্য, আতপচাল ও জল। লক্ষ্মীপূজায় মঙ্গলঘট, ধানের ছড়ার সঙ্গে গৃহস্থের আঙিনায় শোভা পায় চালের গুঁড়োর আল্পনায় লক্ষ্মীর ছাপ। এ উপলক্ষে রমণীরা উপবাসব্রত পালন করেন।
লক্ষ্মীপূজায় রাত্রি জাগরণ করা হয়। কোজাগরী অর্থাৎ কে জাগরী বা কে জেগে আছ। শাস্ত্র মতে এই রাতে লক্ষ্মী সবার বাড়িতে যান। যে গৃহের দরজা বন্ধ থাকে ও গৃহস্থরা ঘুমিয়ে থাকেন, সেখান থেকে লক্ষ্মী ফিরে আসেন। এ কারণে এই লক্ষ্মী পূজাকে কোজাগরী বলা হয় এবং রাত্রি জাগরণের নিয়ম রয়েছে। বাঙালি হিন্দুর ঘরে ঘরে ঘরেই দেবী লক্ষ্মীর পূজা হয়ে থাকে। গৃহস্থরা প্রতি বৃহস্পতিবার লক্ষ্মীর পূজা করেন।
রাজধানীর ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির, রামকৃষ্ণ মিশন ও মঠ মন্দির, রামসীতা মন্দির, পঞ্চানন্দ শিব মন্দির, গৌতম মন্দির, রাধা মাধব বিগ্রহ মন্দির, রাধা গোবিন্দ জিও ঠাকুর মন্দিরসহ বিভিন্ন মন্দির এবং পুরনো ঢাকার শাঁখারীবাজার, তাঁতীবাজার, সূত্রাপুর, ফরাশগঞ্জ এবং লক্ষ্মীবাজারসহ বিভিন্ন এলাকায় ঘরোয়া পরিবেশে লক্ষ্মীপূজার বিভিন্ন ধর্মীয় কর্মসূচি আয়োজন করেছে।
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।